বিশ্বে আশঙ্কাজনক হারে ডায়াবেটিস রোগীর সংখ্যা বেড়ে যাচ্ছে। বর্তমানে ডায়াবেটিসে আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা ৪২ কোটিরও বেশি। ৩০ বছর আগের তুলনায় এই সংখ্যা এখন চার গুণ বেশি- এই হিসাব বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার। ডায়াবেটিস এমন একটি শারীরিক অবস্থা যা সারা জীবনের জন্যে বয়ে বেড়াতে হয় এবং সারা বিশ্বে এর কারণে প্রতি বছর ১০ লাখেরও বেশি মানুষের মৃত্যু হয়। এছাড়া যে কোন ব্যক্তিই যে কোন বয়সেই ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হতে পারেন।

ডায়াবেটিসের কারণে মানুষ অন্ধ হয়ে যেতে পারে, নষ্ট হয়ে যেতে পারে কিডনি এবং অনেক সময় শরীরের নিম্নাঙ্গ কেটেও ফেলতে হতে পারে। এছাড়াও ডায়াবেটিস রোগীদের অন্যতম প্রধান সমস্যা হলো তাদের পায়ের ক্ষত, যা ডায়াবেটিক ফুট নামে পরিচিত। সময়মতো শনাক্তকরণ ও চিকিৎসা না করালে যা অনেক বড় বিপদ ডেকে আনতে পারে।

ডায়াবেটিসে অঙ্গ হারাচ্ছেন অনেক রোগী। কারো কাটতে হচ্ছে হাত, কারো বা পা। সামান্য ক্ষত থেকেই বড় সংক্রমণ। এর প্রধান কারণ অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস।

. পায়ের নখ কাটতে গিয়ে সামান্য ক্ষত থেকে হয় সংক্রমণ। তারপর হয় অঙ্গহানি। পায়ে হেঁটে হাসপাতালে এলেও এখন ফিরতে হবে ক্র্যাচে ভর করে।

. হাতে মাছের কাঁটা বিঁধে ক্ষত না সারায় চিকিৎসকের কাছে গিয়ে জানা যায় কেটে ফেলতে হবে আঙ্গুল।

. হাঁটার সময় পায়ে সামান্য আঘাত। সেখান থেকেই ক্ষত, সংক্রমণ, সবশেষ পায়ের পাতার অর্ধেক কেটে ফেলতে হয়েছে। অনিয়ন্ত্রিত ব্লাড সুগার থাকা অনেক রোগীর পরিণতিই এমন।

চিকিৎসকরা জানান, ডায়াবেটিস রোগীদের পায়ে সামান্য ক্ষত থেকেও বড় সমস্যা হয়। সেথান থেকে গ্যাংরিন হয়, পরে পা কেটে ফেলতে হয়। যাদের ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে থাকে, তাদের সমস্যা কম হয়। যাদের নিয়ন্ত্রণে নেই তাদের ক্ষতি বেশি হয়। তবে জীবন যাপনের ক্ষেত্রে কিছু নিয়ম নীতি মেনে চললে অনেক ক্ষেত্রে ডায়াবেটিসকে প্রতিরোধ করা সম্ভব।

ডায়াবেটিক রোগীদের পায়ে সংবেদনশীলতা ও রক্ত চলাচল কম হয়। তাই নিয়মিত পায়ের যতœ নিতে হবে। প্রতিদিন ঘুমানোর আগে কুসুম গরম পানি দিয়ে পা মুছে ফেলা, হালকা ধরনের জুতা ও মোজা পরা, ব্লেডের বদলে নেইলকাটার দিয়ে নখ কাটার পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকেরা।